ফুজিতার গল্প

 

তীর্থযাত্রীদের সাথে ফুজিটা

“আবদুল-বাহা আসলে কেমন ছিল?”

মাস্টার সবসময় আমার প্রতি খুব দয়াশীল ছিলেন।

“কিন্তু আপনি তাকে কি বলতে শুনেছেন?”

তিনি আমাদের যা কিছু শিখাতে চেয়েছিলেন তা তাঁর লেখা এবং তাঁর উদাহরণে রয়েছে।

“আপনি তাঁর সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন বলে মনে করেন।”

আমি কখনোই অনুভব করিনি যে আমি আবদুল-বাহার জন্য অনেক কিছু করতে পেরেছি।

আমি তাঁর জন্য একটা কাজ করেছিলাম সেটা হয়তো গ্রহণযোগ্য ছিল—

মাঝে মাঝে আমি তাঁকে হাসতাম।

 

আমি যেটুকু পড়েছি তা থেকে, ফুজিতা সত্যিই মাস্টারকে হাসাতে পছন্দ করতেন। ফুজিটা হাইফায় থাকাকালীন এমন দুটি ঘটনা ঘটেছিল যা কার্টিস কেলসির জীবনীতে পাওয়া যায়, কার্টিস কেলসি একজন আমেরিকান, যিনি বাব এর মাজারকে আলোকিত করার জন্য আবদুল-বাহার অনুরোধে বাহাই বিশ্বকেন্দ্রে গিয়েছিলেন-সেই সময়ে যখন কারমেল পর্বতে কোন বিদ্যুৎ ছিল না! নাথান রুটস্টাইন বর্ণনা করেছেন:

মাস্টার ফুজিতাকে খুব ভালোবাসতেন, জাপান থেকে আনা মূল্যবান মুক্তোর প্রতি বিশেষ যত্ন নিতেন। প্রতিদিন দুজনে একসাথে সকালের  নাস্তা করতেন। কোন চাহিদা পূরণ না করেই, মাস্টার ফুজিতার পবিত্রতার আলোকে বসতে পারতেন, এটি ছিল শান্তির সময়। প্রায়ই তাদের সকালের নাস্তা ছিল হাসির উৎসব, বিশেষ করে আবদুল-বাহা যখন ফুজিতাকে দাড়ি রাখার কথা বলতেন তখন। যখন  ফুজিতা পূর্ণবয়স্ক হয়, তখন তার দাঁড়িতে মাত্র কয়েকটা  লম্বা পাতলা চুল ছিল, ইরানীদের মত  মোটা ঘন দাড়ির মতো না। মাস্টার ফুজিতার এই পাতলা দাঁড়ির বিষয়ে তাকে খোঁচা দিয়ে মজা পেতেন, কিন্তু তার প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল ফুজিতাকে হাসানো।

তিনি আরও লিখেছেন যে প্রায়শই কেবল ফুজিতা এবং কার্টিস মাস্টারের সাথে মধ্যাহ্নভোজন ভাগ করতেন এবং তাদের পছন্দের খেলা খেলতেন: এদের একটি মাস্টারের বাদামী বিড়ালকে নিয়ে। ফুজিতা, আবদুল-বাহার বিড়ালের যত্ন নিতেন, তিনি দুপুরের খাবারের সময় সবসময় বিড়ালটিকে রান্নাঘরে আটকে রাখতেন। তিনি শুধু মাস্টারকে বলতে এই কথাটা শোনার জন্যে এই কাজটি করতেন, ‘বিড়ালকে বাইরে যেতে দিন’, অবশ্যই ফুজিটা সেটা করতেন। রান্নাঘরের দরজা খোলার সাথে সাথেই বিড়ালটি আবদুল-বাহার পায়ের কাছে ছুটে যেত, তিনি বিড়ালকে আদর  করে খাওয়াতেন। খাবার খাওয়ার পরে, বিড়ালটি মাস্টারের পায়ে গড়াগড়ি করত এবং জোরে জোরে গড়গড় করে আওয়াজ করত। সবাই জানত এটা একটা রসিকতা, কিন্তু এটা সবার জন্য মজার বিষয় ছিল।

আপনি কি ভাবতে পারেন যে সেই মধ্যাহ্নভোজনগুলিতে  কী আনন্দ হত? খাবারের বিষয়ে ফুজিটা সম্পর্কে আমার পছন্দের আরও দুটি গল্প মাথার চারপাশে ঘুরছে। প্রথমটি হলো কার্টিস কেলসি সহ, মিশরে একটি টাক্সেডো কেনার যাত্রা সম্পর্কে। ফুজিতা ক্যালিফোর্নিয়ায় থাকাকালীন সময়ে পার্টিতে যোগদান করতে পছন্দ করতেন এবং তিনি হাইফায় তার সাথে একটি মার্জিত টাক্সেডো নিয়ে এসেছিলেন। তিনি প্রায়ই এটি পরতেন এবং তারপর মজা করে  বলতেন এটা পরে আমি আর কোথায় যাব!

                আবদুল-বাহা কার্টিস এবং ফুজিতাকে বাবের মাজারের জন্য বিশেষ বৈদ্যুতিক তার কেনার জন্য মিসরে পাঠিয়েছিলেন এবং ফুজিতা ভ্রমণে যাবার সময় তার টাক্সেডো নেওয়ার জন্য জেদ ধরলেন।  যখন তারা মিশরে পৌঁছাল, তখন তাদের সাথে একজন আমেরিকানের দেখা হলো, যারা সাম্প্রতি তীর্থযাত্রা থেকে এসেছে এবং তারা তাদের চিনতে পারলেন। তিনি জেদ ধরলেন যে, তারা যেখানে থাকতেন সেখানেই থাকবেন – উত্তর আফ্রিকার কন্টিনেন্টাল হোটেল, ১৯২১ সালে সবচেয়ে ব্যয়বহুল হোটেলগুলির মধ্যে এটা ছিল একটি। তারা এর চাকচিক্য দেখে থ হয়ে গেল এবং পাছে তাদের জুতার ভেতরে বিচ্ছু লুকিয়ে থাকে সেজন্য জুতা ঝেড়ে ফেলে ভিতরে রাখল  একটি পাতলা গদি ব্যবহার করার পর  তারা তাদের কক্ষের ঐশ্বর্য দেখে বিশেষভাবে আনন্দিত হল – ফুজিটা ঘুঘুর মত ঠিক তার বিছানার মোটা লেপের মধ্যে ঢুকে গেল! যখন বেল-বাজল, যারা তাদের সংগে খুব শ্রদ্ধার সাথে আচরণ করল, তারা তাদের অতিথির সাথে খেতে আমন্ত্রণ জানালো। এখন অনুমান করুন ফুজিটা কোন কাপড়টা পরবেন? যাইহোক, কার্টিস অনুভব করলেন যে আবদুল-বাহা ফুজিতার জন্য তার ইচ্ছা পূরণ করেছেন!

শেষের গল্পটি আরও জটিল। আপনি হয়তো শুনে থাকবেন সামাজিক প্রটোকলকে দুরে ঠেলে দিয়ে স্বল্প সংখ্যক বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে কিভাবে আবদুল-বাহা লুই গ্রেগরি কে সম্মানের আসন উপহার দিয়ে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রন করেছিলেন । তার ভ্রমণের এক পর্যায়ে, আবদুল-বাহা এবং তার পাঁচজন ভ্রমণসঙ্গী গ্লেনউড স্প্রিংসের একটি হোটেলে দুপুরের খাবারের জন্য একটি বাগানের আঙ্গিনায় বসে ছিলেন। হোটেল ম্যানেজার টেবিলে মাত্র পাঁচটি চেয়ার রেখেছিলেন। আবদুল-বাহা যখন জিজ্ঞাসা করলেন কেন? ম্যানেজার ফুজিতাকে ইঙ্গিত করে বললেন, “সে কি আপনার ভৃত্য।” আবদুল-বাহা উত্তর দিলেন যে এই ধরনের কোন পার্থক্য নেই, তিনি বললেন, “আমরা সবাই এক।” 6

ফুজিতা, এই তরুণ জাপানি ছেলে, সে এই দেশে আসা বিখ্যাত জাপানি অভিনেতার সহযোগী ছিল, আমার মনে হয় তার নাম ছিল সোসায়া; ক্যালিফোর্নিয়ায় তারা একসাথে বসবাস করত, তাদের বাবা তাদের স্কুলে যাওয়ার জন্য এই দেশে পাঠিয়েছিলেন এবং তাদের কেউই স্কুলে যাচ্ছিল না, তারা সব সময় বাবার টাকা নিয়ে ফুর্তি করে বেড়াত।  সেই সময় ফুজিটা ক্যালিফোর্নিয়ায় মিসেস গুডল, মিসেস কুপারের সাথে দেখা করেন এবং তারা তাদের একটি সংবাদ  দেন। এরপর যখন তারা ফুজিতাকে বার্তাটা দিল যে, আবদুল -বাহা তার জন্য একটি ফলকলিপি পাঠিয়েছেন এবং এই ফলকলিপিটা আপনি পড়তে পারেন, যেখানে – তিনি ফুজিতার সমস্ত গুণাবলীর প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলেন এবং তিনি তাকে বলেছিলেন যে এই জ্ঞান জাপানের মিকাডো হিসাবে শাসন করার চেয়েও অনেক বড়  এবং ফুজিতা এই ফলকলিপিটি পড়েছিলেন এবং তিনি আমাকে বলেন যে, এটা আমি নই; কিন্তু মাস্টার তাকে বলছিলেন এটা তিনিই; এবং তিনি বলেন, এটা আমার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন, তাই আমি ফলকলিপিটি একপাশে রেখে দিলাম, এবং প্রায় দুই মাস পরে তিনি আবদুল বাহার কাছ থেকে আরেকটি ফলকলিপি পান এবং তিনি আবার সেই  একই কাজ করলেন; এবং একটি তৃতীয় ফলকলিপি ফুজিতার কাছে আসলো সেটা যে কতটা বিস্ময়কর ছিল, এবং ফুজিতা বলল, আচ্ছা, তিনি বলেন যে, আমি এই বিষয়ে আরও ভাল কাজ করতে পারব, কারণ কিছু একটা ঘটবে, তাই সে তার বন্ধুদের জানালো না যে সে কি করতে যাচ্ছে; সে গোপনে তার ব্যাগ গুছিয়ে স্কুলে ফিরে গেল । মিশিগানে, তার স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার জন্যে যখন আবদুল-বাহা আমেরিকা আসেন তখন তিনি ফুজিতাকে ডেকে পাঠান এবং ফুজিতা তার সাথে সারা দেশে ভ্রমণ করেন, এবং তিনি ফুজিতাকে বলেছিলেন কোন বিষেষ বিষয়ে পড়াশোনা করতে,  এবং একদিন তিনি  তাকে হাইফায় আসার জন্য পত্র পাঠান।      ফুজিতা সেটা বিশ্বস্ততার সাথেই সম্পাদন করেছিলেন, এবং — ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর, তিনি ফুজিতাকে নিমন্ত্রন পাঠালেন, এবং ফুজিটা হাইফাতে গেলেন, এবং আবদুল-বাহা তাকে পশ্চিমা তীর্থযাত্রীদের বাড়ির একজন ভৃত্য হিসেবে দায়িত্বে নিযুক্ত করলেন, । তিনি সবার জন্য সকালের নাস্তা তৈরী করতেন, এবং প্রতিদিন সকালে তাকে আবদুল-বাহার কাছে যেতে হতো এবং চা খেতে হতো, যা একটি বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা ছিল এবং তিনি ছিলেন একজন ক্ষুদ্রাকৃতির মানুষ , এবং আবদুল-বাহা তাকে একটি বিচারকের পোষাক দিয়েছিলেন যা দেখে মনে হতো যে সে একজন মোল্লা, সেটা ছিল একটি সাদা পাগড়ি, এই দীর্ঘ সাদা পোশাক, এবং তিনি — তাকে তার দাড়ি বড় করতে বলেছিলেন, কারণ তার দাড়িতে মাত্র কয়েকটা চুল ছিল এবং আবদুল-বাহু ফুজিতাকে দেখে হাসতেন এবং প্রচুর আনন্দ পেতেন এবং তার সাথে মজা করতেন; এবং হাইফা শহরের সমস্ত লোক ফুজিতাকে ভালবাসত, তারা জানত যে তিনি আবদুল-বাহার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। কিন্তু ফুজিতা বেশ চিন্তিত ছিলেন, এখানে তিনি ভর্তি হন এবং আবদুল-বাহার কথামত নিজেকে প্রস্তুত করেন। যেন ‍তিনি আবদুল-বাহার কথামত কাজ করতে পারেন; তাই তার টাক্সেডো এবং সেই সময়ের কাপড় চোপড় দিয়ে ভরা একটি  ট্রাঙ্ক ছিল। প্রতিবার একবার যখন আমি তার রুমে তাকে দেখতাম ফুজিতা তার ট্রাঙ্কের কাছে বসে আছে এবং সে সেই ট্রাঙ্কটি খুলছে এবং সে — দেখছে এই সব কাপড়, এবং এই জিনিস পরিধান করে সে কোথায় যাবে!        একদিন — কার্মেল পর্বতে বাব এর সমাধিতে বৈদ্যুতিক তারের জন্য আমার কিছু বিশেষ তারের প্রয়োজন হল, যেসব কালো তারগুলো তাদের কাছে ছিল তা সমাধির ভেতরে চীনামাটির ফিটিংসগুলো শক্ত করে ধরে রাখার জন্য উপযুক্ত ছিল না তাই  এই তার ব্যবহার করতে চাইলাম না  তখন আমি আবদুল-বাহাকে অনুরোধ করলাম যদি আপনি আমাকে মিশরে যেতে দেন তাহলে কিছু সীসার বৈদ্যুতিক তার কিনে আনতে পারি যা দিয়ে আমি বাবের সমাধির গম্বুজের মধ্যে সিল করে দিতে পারব, যাতে তারগুলো এবং সুইচ দেখা না যায়; তখন আবদুল বাহা বলেন, ঠিক আছে, আপনি ফুজিতাকে আপনার সাথে নিয়ে যান; তিনি জানতেন এটি ফুজিতার জন্য আনন্দের বিষয় হবে । আমরা মিশরে যাচ্ছি সেটা ভেবে আমরা খুব আনন্দিত হলাম। মিশরে গিয়ে আমরা সেই তারটি খোঁজাখুজি শুরু করব। ফুজিতা কিন্তু তার সংগে তার সেই টাক্সেডো নিতে ভুলেন নাই – কারণ তিনি সেই টাক্সেডো মিশরে পরিধান করতে চাচ্ছিলেন!       অতঃপর আমরা মিশরে অন্ধকারের মধ্যে ট্রেন থেকে নামলাম, আমরা জানতাম না যে আমরা কোথায় যাব, তারা আমাদের কোথায় যেতে হবে সে ব্যাপার কিছুই বলেননি, আমরা কিছু হোটেল খুঁজব বলে ঠিক করলাম, এবং আমরা কথা বলছিলাম, ফুজিটা এবং আমি, বারারো স্টেশনে কথা বলছিলাম এবং তখন অনেক অন্ধকার,  আমি ফজ বলে ডাকলাম – আমি তাকে ফজ বলি – আমি বললাম, ফজ, এটা কোন জায়গা বলে আপনি মনে করেন? আমি জানি না, আমরা শহরের দিকে হেঁটে যাব এবং হোটেল খুঁজব; এবং যখন আমরা কথা বলছিলাম, কয়েকজন মহিলা আমাদের কাছাকাছি এলেন, তিনি বললেন, আল্লাহু-আবহা! তখন আমি চারপাশে তাকালাম, তখন আমি  পশ্চিম ডিসির মিসেস নরিসকে দেখতে পেলাম।     তার সাথে তার দুই ছেলে এবং তার মেয়ে ছিল; এবং সে বলল, এই ছেলেরা তোমরা মিশরে কি করছ? এবং আমি বললাম, আচ্ছা, আবদুল বাহার জন্য কিছু সামগ্রী কিনতে আমরা এখানে এসেছি, এবং সে বলে, তোমারা কোথায় যাচ্ছ? আসলে আমরা জানি না, আমরা কোথায় যাচ্ছি … সে বলল, তোমরা এখন আমার সাথে যাবে,  ঠিক আছে!  তখন তিনি আমাদের কায়রোর শেফার্ড হোটেলে নিয়ে গেলেন; একটি সুন্দর হোটেল; এবং সে আমাদের একটি কক্ষ ভাড়া করল, আমি বলব এটা আমাদের কক্ষের চাইতে দ্বিগুণ বড়, এবং এতে দুটি বড় বিছানা ছিল এবং বিছানাটি মেঝে থেকে অনেক উঁচু ছিল।      আচ্ছা, যদি আমরা ফুজিতার সেই শোবার ঘরের দরজা খুলে ফুজিতকে দেখতাম! আমরা আমাদের সেই হাইফায় বিছানায় ঘুমাচ্ছি, যেখানে মাত্র তিন চতুর্থাংশ ইঞ্চি গদি এবং বোর্ড আছে এবং এই লোহার বিছানার চারপাশে মশা ভনভন করছে। ফুজিতা  কয়েক মাস ধরে সেই ধরনের বিছানায় ঘুমাত ; যখন তিনি তাকালেন দেখলেন ভাল – যখন আমরা ঘরের দরজা দিয়ে যাচ্ছিলাম তিনি ব্যাগ বহন করছিলেন – তিনি ব্যাগগুলি তার ট্র্যাকের মধ্যে ফেলে দিলেন, এবং তিনি আনন্দে একটি শব্দ করলেন।       তিনি  বিছানার উপরে লাফ দিয়ে ঠিক এর  মাঝখানে পড়ে গেলেন! এবং আমি তার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছি  এবং এখানে আমি শুধু দেখতে পাচ্ছিলাম যে, তার ছোট্ট মাথাটি দাড়ির সাথে লেগে আছে! এবং মিসেস মুর আমাদের তাড়াহুড়ো করে রাতের খাবারে জন্য যেতে বললেন তিনি প্রস্তুত হয়ে হোটেলে রাতের খাবারের জন্য এসেছিলেন, এবং তাই ফজ চারপাশে তাকিয়ে এই সুন্দর নরম পালকের বিছানা উপভোগ করার পর, তিনি বিছানা থেকে উঠে পড়তে বাধ্য হলেন, এবং তিনি তার টাক্সেডো পরিধান করলেন এবং আমরা শেফার্ড হোটেলের  এক দুর্দান্ত ডাইনিং রুমে গেলাম, এবং অবশ্যই সবার দৃষ্টি ছিল ফুজিতার দিকে, যিনি এই ছোট্ট জাপানি ছিলেন এই স্মার্টলি টাক্সেডো সহ এবং আরও সামনে, এবং তিনি আমাদের একটি মাঝের টেবিলে নিয়ে গেলেন ডাইনিং রুমে এবং অন্যান্য সবাই আমাদের দেখছিল, আমাদের সাথে যে লোকটি এসেছিল – সে ছিল একজন প্রহরী –খুব গুরুত্বপূর্ণ রঙিন ইউনিফর্মধারী এক ভদ্রলোক, টেবিলের সামনে এসে ফুজিটাকে জিজ্ঞাসা করলেন, এবং তিনি বলেন যে ওখানে অনেক লোক আছে – তার মধ্যে কিছু ফার্সি বন্ধু যারা ফুজিটা দেখতে চায়; তাই ফুজিটা উঠে পড়ল এবং ঐ লোকটির কাছে গিয়ে জাপানি কায়দায় মাথা সামনে ঝুঁকে সন্মান করল, তখন সেখানে দরজা দিয়ে সকলেই তাকে দেখছেন, এবং যখন তিনি ডাইনিং রুমের দরজায় পা রাখলেন, তখন কিছু ফার্সি লোক তাকে ধরে নিয়ে গেলেন এবং তাকে উপরে তুলে তার দাড়িতে চুমু দিলেন!       এই লোকগুলি জানতেন যে, আবদুল-বাহা সবসময় ফুজিতার দাড়ি টানতেন, এবং তারপর এই ফার্সি ব্যক্তি যিনি আবদুল-বাহাকে চিনতেন তিনি কেবল ফুজিতার এই দাড়িতে চুমু দিয়েছিলেন, এবং তারপর তিনি তাকে নামিয়ে দিয়েছিলেন এবং তার সাথে কথা বলেছিলেন, এবং ফুজিতা মোটেও বিব্রত ছিল না এবং — অবশ্যই এটা কি হচ্ছে তা দেখার জন্য  লোকজনকে আরও বেশি আগ্রহী করেছিল । আচ্ছা আমরা শেষ পর্যন্ত অনেক লোকের সাথে দেখা করে এই সফরটি করেছি  এবং আমরা  সেখান থেকে হাইফায় ফিরে আসি;

…. এবং এখন আমি মূল কথায়  ফিরে আসব এবং আপনাদেরকে এক ফুজিতার কথা বলব। ফুজিতা যখন হাইফায় এসেছিল তখন ফুজিতা এতটাই বিচলিত ছিল যে, সে ভেবেছিল  আবদুল-বাহা তাকে এবং তার প্রতিভাকে ব্যবহার করেননি যা সে জানত সেটা  ব্যবহার করা হয়নি, সে ঠিকই বুঝতে পেরেছিল, ঠিক আছে আমি শুধু নিজেকে একটা মূর্খ হিসেবে তৈরি করেছি, আমি এখানে এসেছি, এবং সে বলত, হয়ত হাইফায় এসে আমাকে বোকা বানানো হয়েছে, সে বলত, আমি আমেরিকায় আমার বাড়ি ফিরে যাব; এবং এটা ছিল ঐ সময় যখন আবদুল-বাহা আমেরিকাতে ভ্রমণ করছিলেন; এবং যখন তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি ব্যাগপত্র গুছিয়েরে আমেরিকায় ফিরে যাবেন, ঠিক তখন রুহি আফনান ওয়েস্টার্ন পিলগ্রীম হাউসে এসে বললেন, ফুজিতা, আবদুল-বাহ আপনাকে দেখতে চান!

তাই ফুজিটা আবদুল-বাহার বাড়িতে গেল, এবং সে আব্দুল বাহার কক্ষে চলে গেল, এবং আবদুল-বাহা বললেন, ফুজিতা, কি ব্যাপার? ঠিক আছে, তিনি বললেন, যখন আপনি আমেরিকায় ছিলেন – আপনি ছিলেন ফুজিতা:,  আবদুল –বাহা আপনি  আমাকে কিছু বিষয় অধ্যয়ন করতে বলেছিলেন এবং যখন আপনার আমার প্রয়োজন হলো তখন আপনি আমাকে হাইফায় আসতে বললেন এবং আমি এখানে আসলাম এবং আপনি আমকে যা করতে বলেছেন তা হল  ওয়েস্টার্ন পিলগ্রিম হাউসের যত্ন নিতে নেওয়া, এবং আপনি যেভাবে কাজ করতে বলেছেন আমি সেভাবে আমার কোন কাজ করতে পারছি না; আবদুল-বাহা তার দিকে তাকিয়ে হেসে বললেন, আচ্ছা, তিনি বললেন ফুজিটা, যদি আমি একজন মেকানিক চাই, এবং আমি এই কামনা করি, আমি এই লোকদের মধ্যে যে কাউকে পেতে পারি। কিন্তু আপনি যা করছেন তার জন্য আবদুল- বাহা আপনার জন্য শুভ কামনা করেন।

ফুজিটা বলল, আমার সাথে যা করা হয়েছে তা পুরোপুরি ঠিক আছে, তিনি বললেন, এমনকি যদি আমি মাস্টারের জুতাও পরিস্কার করে থাকি, সেটাও পুরোপুরি সন্তোষজনক । তিনি কিছুদিনের জন্য জাপানে ফিরে যান এবং পরে শৌগি এফেন্দি  তার কাছে পত্র পাঠিয়েছিলেন এবং তিনি হাইফাতে আছেন।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top